Sunday, September 1, 2019

রোহিঙ্গাদের হাতে মোবাইল ফোন, পাচার হচ্ছে রাষ্ট্রীয় তথ্য!

উখিয়ায় আশ্রয় শিবিরে অবাধে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম নিবন্ধন করে এক শ্রেণির দোকানদার তা তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। আর এসব সিম ব্যবহার করে অপরাধমূলক নানা কাজের অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। প্রশাসন বলছে, শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এসব সিমের বিরুদ্ধে।

Image result for রোহিঙ্গাদের হাতে মোবাইল ফোন

উখিয়ায় আশ্রয় শিবিরে অবাধে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম নিবন্ধন করে এক শ্রেণির দোকানদার তা তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। আর এসব সিম ব্যবহার করে অপরাধমূলক নানা কাজের অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। প্রশাসন বলছে, শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এসব সিমের বিরুদ্ধে।
আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, শুধু মোবাইল সিম নয়, ক্যাম্পগুলোতে থ্রি-জি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটও ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনেও বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকে। ফলে সেখানেও অনেক বাংলাদেশি সিম ব্যবহার হচ্ছে। কিছু মোবাইল অপারেটর রোহিঙ্গা কাম্পের মাঝে মোবাইল টাওয়ার নির্মাণ করেছে।
উখিয়ার কুতুপালং শিবিরের টিভি সেন্টার এলাকা। রোহিঙ্গাদের এই জটলায় প্রত্যেকের হাতেই মোবাইল ফোন। একাধিক সেটও দেখা গেছে কারও হাতে। অনুপ্রবেশের শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানা হচ্ছে না তা। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় নিজেদের নামে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধনের সুযোগও নেই তাদের। এসব নিয়ম-কানুন জানা না থাকলেও স্থানীয় বাজার থেকে অবাধেই সিম পাওয়ার কথা জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।
এক বাসিন্দা বলেন, আমরা যখন প্রথম মিয়ানমার থেকে নদী পার হয়ে এপারে আসি, তখনই স্থানীয় বাজার থেকে সিম কিনেছি। আমারটা শাহপরীর দ্বীপের এক দোকান থেকে কেনা। কোনো কাগজ লাগেনি। এসব নাম্বার ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের কাছেও আছে। উনারা দরকার হলে ফোন করেন। অন্য এক বাসিন্দা বলেন, এখানে মোবাইল ফোন খুব দরকারি। ধরুন এই পাহাড়ে কোনো সমস্যা হলো। আমরা তখন মোবাইল ফোনেই সব জানাই। এভাবেই এখানে আত্মীয়স্বজনদের খবর রাখি। কেউ বাধা দেয়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হিসাবে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বাংলাদেশি বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের সিম আছে পাঁচ লাখের বেশি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব ফোন ব্যবহার করে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন অনেক রোহিঙ্গা।
প্রশাসন বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরে অবৈধ মোবাইল সিমের ব্যবহার বন্ধে কয়েক দফা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে, যা এখনো চলমান। এরপরও এসব পুরোপুরি বন্ধ না হওয়ায় নেয়া হচ্ছে আলাদা উদ্যোগ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিয়ে নিবন্ধনের মাধ্যমে সিম দিলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে।
এদিকে ২০১৭ সালে ১০ অক্টোবর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেন মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা না পায় সেজন্য অপারেটরগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা-সংক্রান্ত চিঠিও পাঠিয়েছে বিটিআরসি।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে মোবাইল কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক কাভারেজ কক্সবাজার সীমান্তের জিরো লাইনের মধ্যে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সালে উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব বিবেচনায় কক্সবাজার এবং উখিয়া এলাকায় অস্থায়ীভাবে বিটিএস স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়।
এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিম বিক্রির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়া সিম বিক্রির কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে চিঠিতে জানানো হয়, বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সিম বিক্রি ও ব্যবহারের তথ্য পেয়েছে।
চিঠিতে অপারেটরগুলোকে মোবাইল নেটওয়ার্ক যেন মিয়ানমার পর্যন্ত না পাওয়া যায় এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা বন্ধ করে বিটিআরসিকে জানাতে বলা হয়েছে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: