Thursday, May 13, 2021

করোনাকালের মানবিক যোদ্ধা প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর

 


সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন যারা নিজের সুবিধার কথা চিন্তা না করে অসহায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। দেশ এবং জনগণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণের জন্য কাজ করেন। এ ধরণের সমাজসেবা কর্মকান্ডে অসহায় মানুষের পরমবন্ধু হয়ে উঠেছেন করোনাযোদ্ধা প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর।


যিনি নিজেকে সব সময় এলাকার সাধারণ মানুষের একজন সেবক হিসাবে, অতিসাধারণ বেশে জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। যা গোপনে গোপনে। প্রাচার বিমুখ এই তরুণ করোনাযোদ্ধা হতদরিদ্র মানুষ সহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের ভালোবাসা জয় করেছেন। এক সময়কার তুখোড় ছাত্রনেতা হলেও বর্তমানে করোনাযোদ্ধা প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর জার্মান ইন্সটিউট অব অলটারনেটিভ এনার্জির বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সাহস যোগানোর পাশাপাশি আসহায়ের খোঁজ খবর নেয়াই তার প্রতিদিনের কাজ। গত বছর করোনার প্রথম ধাপ থেকে আজ পর্যন্ত দিবা-কিংবা রাত্রি কখনো ত্রাণ সামগ্রী, কখনো করোনায় আক্রান্ত রোগীদের রোগীদের ফলমূল, নগদ অর্থ, কখনো করোনায় আক্রান্ত মূমূর্ষ রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার, কখনো করোনা আক্রান্ত সৎকার স্বেচ্ছাসেবক সংঘের সদস্যদের পাশে থেকে প্রশসংশা কুড়িয়ে আসছেন। এক বছরের উপরে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তিনি ছুটে চলেছেন অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে।

তবে এবার কোন সংগঠন নয়, নিজেই যেন ‘ওয়ান ম্যান আর্মি প্রকৌশলী জ্যোতির্ময়’। আজ বুধবার নগরীর কাজির দেউরী, চেরাগি পাহাড়, দেব পাহাড়, অক্সিজেনসহ বিভিন্ন জায়গায় লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক মানুষের হাতে হাতে তুলে দিয়েছেন ঈদ উপহারের ভালোবাসার থলে।

\

তার দিনের কাজ শুরু হয় তার আশাপাশে লকডাউনে কর্মহীন কোন পরিবার অভুক্ত আছে কিনা তদারকির মাধ্যমে। তাদের সঙ্গে আন্তরিক ও প্রাণবন্ত ব্যবহারের পাশাপাশি উপহার সামগ্রী তুলে দিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের কাছে হয়ে ওঠেন আস্থার ঠিকানা। দেশে করোনা শুরুর পর থেকে আজ পর্যন্ত লকডাউনে কর্মহীন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে উপহার নিয়ে হাজির হচ্ছেন জার্মান ইন্সিটিউট অফ অল্টারনেটিভ এনার্জি’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি এই করোনাযোদ্ধা।


এখনও তাঁর আশে পাশে সমস্যাগ্রস্থ মানুষগুলোর আনাগোনা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় সমাজ কর্মীদের সাথে অসহায় মানুষের সম্পর্কের কথা। সুখে-দুঃখে জনগণের প্রকৃত ভরসার জায়গাই হতে পারে একজন সমাজকর্মী। মানুষের মনে সেরকমই এক বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন এই তরুণ করোনাযোদ্ধা।


ছোটবেলাতেই পারিবারিক শিক্ষা ও সেই সঙ্গে স্কুলে পিতৃতুল্য শিক্ষকগণের কর্তব্যপরায়ণতা এবং বই পুস্তকে লিখিত নৈতিক শিক্ষা তাঁকে সারা জীবন বেঁধে রেখেছে। আজীবন তিনি তাতে নিষ্ঠার সঙ্গে অবগাহন করে পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন। প্রকৌশলী জোর্তিময়ের আছে উদ্যম, নতুন করে ভাবার শক্তি। নতুন কিছু করার স্পৃহা। সেটাকে নষ্ট না করে ভালো কিছু করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। করোনার প্রথম ধাপ থেকে জীবনের মায়া তুচ্ছ করে মাঠে রয়েছে এখনও পর্যন্ত।


এই তরুণ করোনাযোদ্ধা প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর বলেন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষরা বড় বিপাকে পড়েছে। আমরা যদি তাদের পাশে একটু থাকি, একটু সহযোগিতার হাত বাড়াই ক্ষতিতো নেই। অনেকে করছে। তাদের এমন কাজ দেখে মন থেকে শ্রদ্ধা চলে আসছে। শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্যও মাঝে মাঝে বাঁচতে হয়। তিনি বলেন, ইচ্ছা থাকলে কোন সংগঠন এর ব্যানারে থাকার প্রয়োজন নেই, নিজের উদ্যোগেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: