Sunday, November 3, 2019

যৌতুক না পেয়ে গরম তেলে পোড়ালো স্ত্রীকে



স্ত্রীর গায়ে গরম তেলে ঢেলে পুড়িয়ে দিলেন এক পাষণ্ড স্বামী। শুধু তাই নয়, বিনা চিকিৎসায় তাকে সাত দিন ঘরে তালা বন্ধ করেও রাখেন তিনি। যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা না দিতে পারাই সেই গৃহবধূর দোষ।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় স্ত্রী নাছিমা খাতুনকে যৌতুকের জন‌্য অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন স্বামী আসাদুল মিয়া।
ফুলবাড়িয়ার কুশমাইল ইউনিয়নের ধামর গ্রামে গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে নাসিমার বাপের বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। ঘরের তালা ভেঙ্গে তারা নাছিমাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।
মঙ্গলবার ভুক্তভোগী নাসিমা খাতুন জানান, বিয়ের সময় তার স্বামীকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। সম্প্রতি আরো ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তাকে মারধর করতেন আসাদুল।
তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুপুরে রান্না করছিলাম। সে সময় যৌতুক নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রান্নার গরম তেল আমার গায়ে  ঢেলে দিয়ে শরীর ঝলসে দেন আমার স্বামী। বিষয়টি যাতে কেউ জানতে না পারে, সে জন্য আমাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে সাত দিন আটকে রাখে। বিষয়টি আমার শ্বশুর তোতা মিয়া, শাশুড়ি রহিমা খাতুনও জানেন। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।’
নাছিমার ভাই ইছাহাক আলী বলেন, ‘আমার বোনকে এর আগেও বিড়ির ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন করেছে তার স্বামী। এবার গরম তেলে ঢেলে শরীর ঝলসে দিয়েছে। বিষয়টি আমার বোনের শ্বশুর-শাশুড়িও জানেন। কিন্তু বিষয়টি কাউকে না জানাতে নাছিমাকে হুমকি দিয়েছেন। তারা বলেন, বিষয়টি কাউকে জানালে কোলের শিশুটিকে মেরে ফেলা হবে।’
ভুক্তভোগীর স্বামী আসাদুল মিয়ার পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।
নওগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘গরম তেলে গৃহবধূর শরীর ঝলসে দেয়া হয়েছে। তার চোখের ডান পাশ মারাত্মকভাবে ক্ষত হয়েছে।’
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলামিন জানান, বিষয়টি তার জানা নাই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: