Saturday, October 19, 2019

নড়াইলে বৃদ্ধ দম্পতিকে মারধর করে গরু লুটের অভিযোগ



নড়াইলের নড়াগাতিতে বয়োবৃদ্ধ সুমঙ্গল মন্ডল ওরফে বাবু (৮০) নামের এক দম্পতিকে মারধর করে বাঁশ ও গরু লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে প্রতিপক্ষের ভয়ে এখনো পর্যন্ত মামলা করতে পারেননি তিনি। উল্টো সুমঙ্গল দম্পতির নামে মামলা করেছেন প্রতিপক্ষরা। 
জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নড়াগাতির বাঐসোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কানাইপুর গ্রামের বালা উদ্দিন মোল্যাসহ তার ছেলে ও ভাতিজারা সুমঙ্গল ও তার স্ত্রী দিপালী মন্ডলের (৬০) ওপর হামলা চালায়। তবে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় উল্টো সুমঙ্গল মন্ডল ও তার স্ত্রীর নামে মামলা দায়ের করেন। পুলিশও তাদের গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগী সুমঙ্গল মন্ডল জানান, স্থানীয় খলিশাখালী গ্রামে ৪২ শতক মাতুল জমির ওপর তিনি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু, ১৯৯১ সালের ৯ মে বালা উদ্দিন মোল্যারা সুমঙ্গল মন্ডলের ৪২ শতক জমি জাল দলিল করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জাল দলিলের বিষয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। 
পরে সুমঙ্গলের স্ত্রী বাদী হয়ে আদালতে মামলাও করেন। বিচারাধীন থাকা অবস্থায় প্রভাব খাটিয়ে বালা উদ্দিন মোল্যাসহ তার লোকজন ওই জমি থেকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাঁশ কাটতে যায়। সুমঙ্গল মন্ডল ও তার স্ত্রী বাঁধা দিলে বালা উদ্দিন মোল্যাসহ তার লোকজন সুমঙ্গল দম্পতিকে বেড়ধক মারধরসহ তাদের বসত ঘর ভাঙচুর করে। 
এছাড়া চারটি গরু নিয়ে যায়। আর সাড়ে তিন হাজার টাকার বাঁশ কেটে বিক্রি করে দেয়। এরপর সুমঙ্গল দম্পতিকে পুলিশে ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
এদিকে, বালা উদ্দিন মোল্যার ছেলে শাহ আলম মোল্যা বাদী হয়ে উল্টো সুমঙ্গল মন্ডল ও তার স্ত্রী দিপালীকে আসামি করে ওইদিন (১৭ সেপ্টেম্বর) নড়াগাতি থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সুমঙ্গল চারদিন কারাগারে ছিলেন। জামিনে এসে গত ২৩ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।   
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে-জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এজাহারকারীর বাবার (বালা উদ্দিন মোল্যা) নাম ধরে সুমঙ্গল মন্ডল গালিগালাজ করে। এজাহারকারীর ছোট ভাই শাহিন গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সুমঙ্গল মন্ডল ভেলা (সড়কি) দিয়ে শাহিন মোল্যার বুকের ডান পাশে জখম করে। আর সুমঙ্গলের স্ত্রী দিপালী বাঁশের লাঠি দিয়ে শাহিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে। কিন্তু এজাহারের বিষয়টি এলাকার লোকজন হাস্যকর বলে মনে করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, ৮০ বছরের বয়োবৃদ্ধ সুমঙ্গল মন্ডলের পক্ষে ভেলা দিয়ে কোপানো সম্ভব নয়। সুমঙ্গলের স্ত্রীও মারধর করেনি। তবে অভিযুক্ত বালা উদ্দিন মোল্যাদের ভয়ে আশেপাশের কেউ মুখ খুলতে চায়নি। বালা উদ্দিন মোল্যার ভাজিতা শাহ মোহাম্মদ ফোরকান মোল্যা বাঐসোনা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। 
এ ব্যাপারে মামলার বাদী শাহ আলম মোল্যার সঙ্গে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি। তবে বাঐসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ ফোরকান মোল্যা বলেন, সুমঙ্গল মন্ডল ভেলা (সড়কি) দিয়ে চাচাতো ভাই শাহিন মোল্যাকে কুপিয়ে জখম করে। 
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আইনুল বলেন, বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে কথাকাটি এবং সুমঙ্গলের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে লোকমুখে শুনেছি। আর গরু লুটের বিষয়টি আমার জানা নেই। 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নড়াগাতি থানার এসআই এ কে এম তসরিফুজ্জামান বলেন, মামলার বাদী শাহ আলম মোল্যা বাঁশ কাটতে গেলে সুমঙ্গল বাঁধা দেন। কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুমঙ্গল মন্ডল প্রতিপক্ষের শাহিন মোল্যাকে মারধর করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। 



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: