Saturday, August 10, 2019

ভারত–পাকিস্তান বাণিজ্য বন্ধ কোহলির এক পোস্টেই ক্ষতি পুষিয়ে নেবে ভারত

Image result for ভারত–পাকিস্তান

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ৭০ বছরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পরই দেশটির সঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত ঘোষণা করে পাকিস্তান। তবে ভারত কীভাবে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেবে, তা এক টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।

তিনি বলেছেন, ‘বিরাট কোহলির ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টের আয়ে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।’

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত হলে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষতি হবে। এ ক্ষতি হয়তো কারও বেলায় কম, কারও বেলায় বেশি। ভারতের দাবি, এবার নিজের পায়েই কুড়াল মেরে বাণিজ্যও স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত হওয়ায় ভারত কীভাবে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে, তার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন অজিত দোভাল। তিনি পাকিস্তানের সিদ্ধান্তকে মশকরা করে গতকাল বৃহস্পতিবার টুইটারে একটু পোস্ট দিয়েছেন।

তিনি টুইটে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সব রকম বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। এতে ভারতের অর্থনীতির ক্ষতি হলো। বিরাট কোহলি প্রতিটা ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করে যত টাকা পান, আমাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ততটাই। খুব খারাপ। এত বড় ক্ষতি আমরা কীভাবে সামাল দেব!’

অজিত দোভালের টুইট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একেকটি প্রমোশনাল পোস্ট থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ রুপি আয় করেন ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি। অজিত দোভালের দাবি, পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সমপরিমাণ অর্থই আয় করে ভারত, ভারতীয় বিপুল অর্থনীতিতে যা অতি নগণ্য। পাকিস্তানের বাণিজ্য স্থগিতের সিদ্ধান্তে ভারতের চেয়ে তাদেরই বেশি ক্ষতি হবে বলেও মন্তব্য করেছেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

দোভালের টুইটের পরেই অবশ্যই হাসির রোল নেট দুনিয়ায়। এমনিতেই পাকিস্তানের অর্থনীতির অবস্থা যাচ্ছে তাই। বাণিজ্য বন্ধে ভারতের থেকেই বেশি ক্ষতি হবে পাকিস্তানের। ক্ষতির পরিমাণ সামলানোর মতো অবস্থা ভারতের আছে। অনেকেই বলেছেন, ক্ষতি পোষাতে বিরাট একটু বেশি পোস্ট করলেই হবে।

জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়ে ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাঁচ দফা পরিকল্পনা নিয়েছে ইসলামাবাদ। টুইট বার্তায় সেই পরিকল্পনার বিস্তারিত জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাতে বলা হয়েছে, ১. ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক নিম্নমুখী করা, ২. ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত, ৩. দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন চুক্তিগুলো নতুন করে পর্যালোচনা ৪. জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন এবং ৫. কাশ্মীরি জনগণের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আসন্ন স্বাধীনতা দিবস (১৪ আগস্ট) উদযাপন করা।

এর আগে জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর মতে, ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে পৃথক করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। এর মাধ্যমে জাতিগত নিধন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদির সরকার বাতিল করে দিয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা। এই ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আলাদা পতাকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আলাদা সংবিধান ছিল। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। এবার সেটাও নিয়ে নেওয়া হলো।

এ ছাড়া জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই টুকরোও করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হয়েছে নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তার পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: