Wednesday, August 7, 2019

সাগরের তলায় মিললো নৌকা ভর্তি সোনার মুদ্রা ও গয়না



আটলান্টিকের পানির তলায় তলিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি নিশ্চয়ই জানেন। প্রাচীন যুগের বহু শহরের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছিল ভূমিকম্প বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে। আটলান্টিক নিয়ে যখন চাঞ্চল্য বা কৌতূহল কার্যত চাপা পড়ে গিয়েছিল, তখনই আবার খোঁজ মিলল ভূমধ্যসাগরের তলায় চাপা পড়ে থাকা নতুন শহরের।

সমুদ্রের ১৫০ ফুট গভীরে দেখা মিলল দুই হাজার বছরের পুরনো শহরের মন্দির ও বিভিন্ন মূর্তির। পাওয়া গেল ৬৪টি প্রাচীন নৌকা, যা বাসনপত্র, সোনার মুদ্রা ও গয়নাগাটিতে পরিপূর্ণ। ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো এ শহরের খোঁজ পান এক দল মেরিন আর্কিওলজিস্ট। এরপর উদ্ধারকাজ শুরু হয়, যা আজও চলছে।


গবেষক ফ্রাংক গোডিও তাঁর সহকারীদের নিয়ে মিসরীয় উপকূলে ১৮ শতাব্দীর ফরাসি যুদ্ধজাহাজের খোঁজ চালাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁরা একটি বিরাট পাথর দেখতে পান। একে একে খুঁজে পাওয়া যায় আরো পাঁচটি পাথর। এ পাথরের নিচেই চাপা পড়েছিল হারিয়ে যাওয়া শহর।

আজ থেকে প্রায় দুই হাজার ৭০০ বছর আগে এ শহরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ওই সময় এ শহরটি ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র ছিল। পুরো শহরটিই পানির ওপর অবস্থিত হওয়ায় বাড়ি থেকে মন্দির ও দোকানপাটে যাতায়াতের মূল মাধ্যম ছিল নৌকা। হেঁটে যাওয়ার জন্য সেতুও ছিল। নিল নদের ঠিক সামনেই অবস্থিত ছিল এ শহর, যার নাম হেরাক্লিওন। এ শহর ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। নিল নদের রানি হিসেবে ক্লিওপেট্রার অভিষেক ঘটেছিল এ শহরের মন্দিরেই। আবার ‘হেলেন অব ট্রয়’, যাকে মিসরীয় সভ্যতায় সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে গণ্য করা হয়, তিনিও প্যারিসের সঙ্গে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন এ শহরেই।

সমুদ্রের তলা থেকে উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলো দেখে আন্দাজ করা হচ্ছে, খ্রিস্টপূর্ব ৩০ শতাব্দীতে ব্যবহৃত হতো এ ধরনের মুদ্রা। ব্রোঞ্জের মুদ্রাগুলো রাজা টলেমির সময়কালের। গবেষকদের আন্দাজ, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সূচনা অবধি এই শহরে বসবাস ছিল মানুষের।

বছর ১৫ ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে গবেষকরা ৬৪টি জাহাজ, ৭০০টি নোঙর, ১৬ ফুট উচ্চতার দুটি মূর্তি, প্রচুর সোনার গয়না, ব্রোঞ্জের মুদ্রা পান। মিসরীয় দেবতা আমুন-গেরেবের মন্দিরের ভাঙা অংশও উদ্ধার হয়।

গবেষক ফ্রাংক গোডিও বলেন, ‘আরো ১০০ বছর ধরে উদ্ধারকাজ চললেও হয়তো এ শহরকে সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এই শহরের হয়তো আরো অনেক ইতিহাস আছে, যা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।’ সূত্র : আনন্দবাজার।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: