Friday, August 9, 2019

কোরবানীকে সামনে রেখে সরগরম কামারপল্লী


বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার থেকে ॥ ৯ আগষ্ট কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চাহিদা বাড়ছে পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জামের। এ চাহিদা পূরণে ব্যস্ততা বেড়েছে জেলার বিভিন্ন কামারের দোকানগুলোতে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে তা জমে উঠেছে। দিন-রাত টুং টাং শব্দ আসছে কামারের দোকান থেকে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানান-বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি। তাই তৈরীকৃত সরঞ্জাম বিক্রি বেশী হলেও লাভ কম হয়। আর ২ দিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরো করার জন্য দা, কাটারী, ছুরি অপরিহার্য। শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে কক্সবাজার শহরের চাউল বাজারস্থ কামার পল্লী, কালুর দোকান, বিমান বন্দর সড়ক, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা গেছে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বটি, ছুরি, কাটারি, দা, বেকি, কুঠার, খুন্তা ও লাঙ্গলের ফলাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বানাচ্ছে কামাররা। এসব ব্যবহার্য জিনিস শহরে চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি শহরের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা। আবার শহর থেকে লোহা কিনে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় এসব জিনিসপত্র। শহরের চাউল বাজারস্থ কামার পল্লীর বাদল কর্মকার নামের এক ব্যবসায়ী জানান-সারা বছরের মধ্যে কোরবানি ঈদেই আমাদের বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি। তাই তৈরীকৃত সরঞ্জাম বিক্রি বেশী হলেও লাভ কম হয়। আমরা বছরজুড়ে এ সময়ের অপেক্ষায় থাকি। একই কথা জানান ওই এলাকার রাজিব নামের আরেক দোকানী। তিনি বলেন-দীর্ঘ প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে পিতার সাথে এ পেশার সঙ্গে জড়িত আছি। অন্য সময় তেমন কাজের চাপ থাকে না। কিন্তু কোরবানিতে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র তৈরী করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সদর উপজেলার খুরুশকুল পালপাড়া বাজারের রনজিত কর্মকার বলেন, আমার বাপ-দাদার মূল পেশা ছিল এটা। তারা গত হওয়ার পর ওই সূত্রে ধরে আমার জীবনেরও শেষ মূহুর্তে এই পেশা ধরে রেখেছি। সারা দিন চাকু, বটি, কাটারী তৈরি করে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে বাঁচি। কেন না এই পেশা ছেড়ে অন্য কোন ভাল পেশায় যাব এই রকম আর্থিক সংগতি আমার নেই। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই কাজ করে আসছে সারা বছর তেমন কাজ হয়না। কোরবানি আসলে আমাদের ভাল কাজ হয় যা দিয়ে সারা বছর চলার জন্য কিছু আয় করে রাখি। পিএমখালীর জুমছড়ি এলাকা থেকে সরঞ্জাম কিনতে আসা আবুল কাশেম নামের এক ক্রেতা জানান-কামারদের কাছ থেকে তারা বছরজুড়ে সাংসারিক ও কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনে থাকেন। তবে কোরবানির সময় পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জামের চাহিদা বেশি থাকে। এসময় প্রচুর চাহিদার কারণে পছন্দমত সরঞ্জাম পেতে বেশ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ------------------ বলরাম দাশ অনুপম কক্সবাজার প্রতিনিধি মোবাইল : ০১৮১৮-২০৫৭৬৩।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: