Wednesday, August 7, 2019

জেঠুর স্বপ্ন সত্যি করলেন মোদি’,৩৭০ বিলুপ্তিতে প্রতিক্রিয়া শ্যামাপ্রসাদের ভাইপোর

'

সৌম্য মুখোপাধ্যায়: শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অপূর্ণ স্বপ্ন সত্যি হল আজ। সোমবার ৩৭০ ধারা বাতিলের খবর পেয়ে এই মন্তব্যই করলেন তাঁর ভাই বামাপ্রসাদের ছেলে জনতোষ মুখোপাধ্যায়। ভারতকেশরী শ্যামাপ্রসাদের পরিবারের অন্যরা দেশবিদেশে ছড়িয়ে থাকলেও পৈতৃক ভিটে হুগলির জিরাটেই থাকেন তিনি। বর্তমানে বয়সের ভারে কিছুটা খারাপ থাকে শরীর। মাঝে মাঝে সাংসারিক চাপে মনটাও থাকে বিক্ষিপ্ত। কিন্তু, শ্যামাপ্রসাদের প্রসঙ্গ এলেই চোখে যেন জ্বলে ওঠে আগুন। বুকের ভিতরে থাকা যন্ত্রণাটা যেন আগ্নেয়গিরির মতো লাভা ছড়াতে চায় চারিদিকে। আসলে জেঠুর অকালমৃত্যু ও তাঁর অপূর্ণ থাকা স্বপ্নের কথা মনে পড়লেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না তিনি। তবে আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে সেই সব দুঃখ ভুলে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় মুখর হয়ে উঠলেন।
বললেন, “আমার জেঠুর অপূর্ণ স্বপ্ন আজ সত্যি করলেন আয়রন ম্যান মোদি। যে কাজ আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে কংগ্রেসের করা উচিত ছিল। কিন্তু, রাজনৈতিক কারণে তাঁরা সেটা করেনি। আজ মোদিজির হাত ধরে তা বাস্তবায়িত হল। এর জন্য আমি ও আমার পরিবার তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমাদের পরিবারের অনেক দিনের মনোকষ্ট আজ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। এই সিদ্ধান্তের জন্য দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। প্রধানমন্ত্রী ও ওনার কর্মদক্ষতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। আজকে খুব খুশি হয়েছি আমি। আর বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে নতুন ভারত।”
বাবা-মা মারা যাওয়ার পর আর্থিক সমস্যার কারণে পৈতৃক ভিটে জিরাট ছেড়ে কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদের ঠাকুরদা গঙ্গাপ্রসাদ। কিন্তু, নাড়ির টানে তিনি ও তাঁর ছেলে বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মাঝে মাঝে ছুটি কাটাতে চলে আসতেন হুগলি জেলার এই গ্রামে। আর শ্যামাপ্রসাদের তো অনেক স্মৃতি ছড়িয়ে আছে জিরাটের আনাচে-কানাচে। সেই সব দিনের কথা মনে করে নস্টালজিক হয়ে পড়েন তাঁর  এক পরিচিত নিত্যতোষ মুখোপাধ্যায়।
অতীতের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, “প্রতিবছর নিয়ম করে দুর্গাপুজোর একাদশীর দিন জিরাটের বাড়িতে আসতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আমরা তখন খুব ছোট ছিলাম। তবু আজও অমলিন সেইসব স্মৃতি। সোমবার টিভি খুলে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার খবর পেয়ে মনটা খুশিতে ভরে গেল। এতদিন রাজনৈতিক কারণের জন্য কেউই এই সাহস দেখাতে পারছিল না। কিন্তু, এখন দেশের ভার এমন একজনের হাতে যিনি কারও কাছে মাথা নত করেন না। আজ তারই ফলশ্রুতি দেখতে পেলেন দেশবাসী। মহম্মদ আলি জিন্না ভারত ভাগ করে পাকিস্তান তৈরির জন্য আজও সেদেশে কায়দ-এ-আজম রূপে পূজিত হয়। আর আমরা এতটাই দুর্ভাগা যে বাঙালি হিন্দুদের বাঁচানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের দাবি তোলা শ্যামাপ্রসাদকে সাম্প্রদায়িক তকমা দিয়েছি। আশা করি, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সেই মানুষটিকে কিছুটা হলেও জানার চেষ্টা করবে আজকের প্রজন্ম।”

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: