Tuesday, July 30, 2019

ভিআইপি’র বিশেষ সুবিধা অসাংবিধানিক, অবৈধ ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি


এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার জন্য বৃহস্পতিবার ফেরি ছাড়তে তিন ঘণ্টা দেরি হওয়ায় সংকটাপন্ন এক রোগী অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।


সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষকে যখন ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল তখন মাদারীপুরের একটি ফেরিঘাটে দীর্ঘসময় আটকে ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি।

বাংলাদেশে ভিআইপিদের বিশেষ সুবিধা অর্জনের বিষটি অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এ ধরনের চর্চাকে সুস্পষ্টভাবে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ও বলেন তিনি।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ফেরিঘাটে ছাত্র মারা যাওয়ার ঘটনা ভিআইপি হিসেবে তাদের বিশেষ সুবিধা অর্জনের নামে অসাংবিধানিক, সম্পূর্ণভাবে অবৈধ, বৈষম্যমূলক এবং একই সঙ্গে অনৈতিক ও অমানবিক দিক, পরিষ্কারভাবেই ক্ষমতার অব্যবহারের দৃষ্টান্ত। আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে।”

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, “বাংলাদেশে যে ভিআইপি তার জন্য সুবিধার সীমারেখা রয়েছে। যারা ভিআইপি তাদের কার্যালয় নির্ধারিত, তাদের চেয়ারটা নির্ধারিত, তাদের গাড়িটা নির্ধারিত, তাদের বাড়িটা নির্ধারিত। এই ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।”

তবে জনগণের ব্যবহারযোগ্য যে সুযোগ-সুবিধা যেমন রাস্তাঘাট, তা তারা (ভিআইপি ব্যক্তিরা) দখল করে নেবেন বা বন্ধ করে দেবেন – তা কোন ভিআইপি আচরণ হতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইফতেখারুজ্জামানের মতে, “ভিআইপি হতে গেলে ভিআইপির সত্তাটা তা অর্জন করতে হয়। সেটা জোর করে আদায় করা যায় না। মানুষকে বিপদে ফেলে জিম্মি করে ভিআইপি সুবিধা ভোগ করা কোন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

কিছুদিন আগে ভিআইপিরা দাবি তোলেন- রাস্তার একটা নির্ধারিত অংশ তাদের জন্য রাখতে হবে এবং বিমানবন্দরে তাদের নিরাপত্তা তল্লাশি করা যাবে না।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, “ক্ষমতার এ ধরনের সীমাহীন অপব্যবহার কোনোভাবেই একটা গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। ভিআইপিদের সুনির্দিষ্টভাবে সীমারেখা চিহ্নিত থাকতে হবে যে কোন কোন সুযোগ-সুবিধা তারা পাবেন আর কোন কোনটা পাবেন না।”

ইফতেখারুজ্জামানের মতে, ভিআইপিদের বিশেষ সুবিধার বোঝাটা যেহেতু জনগণকেই শেষমেশ নিতে হয় – সেটা অর্থমূল্যে হোক কিংবা মানসিক জীবনের মূল্যে হোক। তাই এই বোঝাটা নিতে চায় কিনা তাদের মতামত নিতে হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: