প্রকাশ দেব,
মেথর, হরিজন, দলিত যে নামেই ডাকুন না কেন, তারা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত শ্রেণীগুলোর একটি। শিক্ষা সংস্কৃতি সবক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে। সমাজের মূল ধারার সঙ্গে যুগ যুগ ধরে তাদের এই ফারাক। মূলধারার সভ্য দাবিদার লোকজন কখনই হরিজনদের মর্যাদা দিতে চাননি। রাজধানীর টিকাটুলী মেথরপট্টিও এর ব্যাতিক্রম নয়। অবহেলা বৈষম্যের মধ্যেই তাদের নিত্য পথচলা।
তবে দীর্ঘদিনের এই বৈষম্য ও অবহেলা ঘোচাতে চান হরিজনরা। তারা আর পিছিয়ে থাকতে চান না। হরিজনরা চান না তাদের সন্তানরাও তাদের মত অযন্ত অবহেলায় অবজ্ঞায় জীবন কাটিয়ে দিক। হরিজনদের স্বপ্নসারথি রাজধানী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলটিই তাদের সচেতন করেছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে ভালোভাবে বাঁচার, জীবনমান উন্নয়নের। সমাজের অবহেলিত এই মানুষগুলোকে মূল স্রোতে নিয়ে আসার জন্য কাজ করে যাচ্ছে এই বিদ্যাপীঠ।টিকাটুলী মেথরপট্টির ‘রাজধানী আদর্শ বিদ্যাপীঠ’র প্রতিষ্ঠা ১৯৮২ সালে। ফুড ফর দি হাঙ্গরী ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার বিস্তারে অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এস এম শাহ আলম বলেন, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষাভাষি দুই শ্রেণির মানুষ এখানকার সুইপার কলোনিতে বসবাস করেন। তাদের জন্য এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ছিল এই জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা। যাতে তারা মৌলিক অধিকারগুলো সম্পর্কে সচেতন হোন, জীবনমান উন্নত হয়। প্রথম দিকে এখানকার লোকজন পড়ালেখার প্রতি তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তারা স্কুলে সন্তানদের পাঠাতে আগ্রহ দেখাতেন না। কিন্তু ফুড ফর দি হাঙ্গরী ইন্টারন্যাশনালের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে পড়ালেখার তাগিদ জন্ম দেন। ফলে হরিজনরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে থাকে।
0 coment rios: