Wednesday, August 21, 2019

জন্মাষ্টমী পরিষদের দাবি সংখ্যালঘুদের রক্ষায় কমিটি গঠনের

আসন্ন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষে এ আবেদন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে বলেন, “মাতৃভূমি বাংলাদেশে মানসম্মান নিয়ে শান্তিতে সমঅধিকারসহ বসবাস করার আমাদের যে প্রত্যাশা ও অধিকার তা নিশ্চিত করতে আবেদন করি।

“আমরা আন্তরিকভাবে চাই আন্তর্জাতিক সমাজে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হোক। আমরা নিরাপত্তা চাই, সমঅধিকারে বাঁচতে চাই।”

পরিষদের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ পালিত বলেন, “বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। আমরা মিলেমিশে বাস করি। মাঝে মধ্যে দুষ্কৃতকারীরা বৌদ্ধ বিহার, গির্জা ও মঠ-মন্দির ভাংচুর করে, সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়, সেগুলোকেই বুঝিয়েছি। সেগুলো যেন না ঘটে।

“যে ঘটনাগুলো ঘটে তা নিরসনকল্পে জাতীয় পর্যায়ে কোর কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছি ১১ সদস্য নিয়ে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে যেন সরকারকে তারা অবহিত করতে পারে। উসকানি দিয়ে কেউ যেন সফল হতে না পারে।”

পরিষদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের মানবতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা, সারাদেশে বেদখল মঠ-মন্দির ও দেবোত্তর সম্পতি উদ্ধার এবং সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন, দুর্গাপূজায় চারদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা, অর্পিত সম্পত্তির মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রতি জেলায় বিশেষ আদালত গঠন এবং এরশাদ সরকারের সময়ে সৃষ্ট বাংলা নববর্ষের তারিখ বিভ্রাট অবসানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

লিখিত বক্তব্যে বিমল কান্তি দে বলেন, “স্বধর্ম আচরণ ও স্বদেশ প্রেম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সকল ধর্মের মানুষের সমঅধিকারেও আমরা অটল বিশ্বাসী।

“গণতান্ত্রিক পরিবেশের যে মূল কথা তা হল অহিংস মনোভাব ও সহিষ্ণুতা। তাই বৈষম্য দূরীকরণে আমাদের প্রাণের দাবি এই ১১ দফা।”

আগামী ১ সেপ্টেম্বর গণভবনে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছ বিনিময় অনুষ্ঠানে ১১ দফা দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উপলক্ষে আগামী শুক্রবার থেকে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টায় নগরীর জেএম সেন হল প্রাঙ্গন থেকে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভযাত্রা উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

চারদিনের আয়োজনের মাতৃ সম্মেলন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, জন্মাষ্টমী ‍পূজা, নাম সংকীর্তন ও মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হবে।

সাঁইত্রিশ বছর ধরে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম থেকেই এই আয়োজনের সূত্রপাত। বর্তমানে দেশের প্রায় সব জেলায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গ দে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাশ ও চন্দন তালুকদার, সহ-সভাপতি সাধন ধর, অলক দাশ, দুলাল চন্দ্র দে, পরেশ চন্দ্র প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: